রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৯

দীঘলবাঁকের উপাখ্যান --- ২

মধুমিতা নাথ


একটা কবিতা লিখব বলে রাতদিন অক্ষর জড়ো করি , 

অক্ষর ভেঙে মহাশূন্যে জোড়াতালি অক্ষর-প্রাসাদ গড়ি 

খাঁজে খাঁজে গুঁজে দিই কসমেটিক প্রলেপের রঙিন বর্ণমালা


বৃক্ষের ছাল ছাড়িয়ে দেখি অন্দরে কতটা সবুজ এখনো লুকোনো সঞ্চয়

সারি সারি পসরার ভিড় ঘেঁটে তুলে আনি দুর্লভ পারিজাত , 

ম্রিয়মান স্বর্গীয় আভা মেখে কবি নামধারী আমি আদতে আনাড়ি


কিনেছি জলের দরে আক্রোশ তার ,মায়ের শুকনো স্তন চুষে যে উলঙ্গ শিশু আধো ঘুম আধো জাগরণে কঁকিয়ে ওঠে,শীর্ণ দীর্ণ মায়ের চুপ চুপ স্বর --- সো যা বেটা,নাহি তো গব্বর আ যায়গা ...



মিথ ঘেঁটে তুলে আনি ইভ-সত্তার ফুলঝুরি উপকথা,পথে যেতে লিলিথের গুণমুগ্ধ আমি কবিতা ভুলে ডাইনির প্রেমে মজে থাকি

অক্ষরে অক্ষরে ঠোকাঠুকি , ফুলকি ঝরে কোনো ভাবী প্রমিথিউসের প্রত্যাশায়


বহুদিন , বহুকাল অপেক্ষা তোমার জন্য হে পরাক্রম , তোমার তেজদীপ্ত মহিমায়

অপরিণামদর্শী জ্ঞানে করে দিও ক্ষমা


পরিপূর্ণ হোক আসন নবরত্ন সভার

এ জন্মে কবি হওয়া হলো না আমার

শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৯

দীঘলবাঁকের উপাখ্যান ---১

----------------------------------------

মধুমিতা নাথ


এই তো ---
আর অল্প কিছু সময়
ফটকে তালা ঝুলিয়ে , সিঁড়ির আলোগুলি নিভিয়ে এলেই আজকের মতো সব কাজ ইতি
এরপর আমি হাসবো , গাইব , নিজের মতো করে ভাববো
যেমনটা তোমরা করো ছুটির দিনগুলোতে

আরে আরে ! যাচ্ছো কোথায় , হৃদয় ?
তুমি কি খুব বেশি হয়রান ! কোনো আঘাত পাওনি তো ! চিহ্ন দেখছি না,
আজকাল চেতনার সঙ্গে তোমার খুব কথা কাটাকাটি শুনতে পাই , বিতর্ক ভালো , কুতর্ক নয়
ভালোবাসায় খামতি রেখো না!

আঁখি , তুমি কি খুব বেশি ক্লান্ত !
সারাদিন ডিজিটাল স্ক্রিনে সংখ্যাতত্ত্বের জালে আটকে জানালাটা খুলতে ভুলেছ !
অবশ্য সবই আমার অনুমান , তোমরা তো কিছু বলবেই না ঠিক করে ফেলেছ

পাহাড়টাকে দ্যাখো ভালো করে।
সারা গায়ে অজস্র খাঁজ নিয়ে , পাথর বুকে কতটা ঋজু আর দরাজ এখনো
ওখানেও পাখিদের আনাগোনা বারোমাস
পাথরের খাঁজে শস্যদানা খুঁজতে গিয়ে কাঠপিঁপড়ে খুঁটে খায় ,
পিঁপড়েরও বিষ থাকে , জানো তো !
শীত শেষ বলেই না গাছগুলো ন্যাড়া ডাল , তবুও মেঘের দিকেই হাত বাড়িয়ে আলিঙ্গন প্রত্যাশা করে বসন্তের ,
কৃষ্ণকলি মেঘেদের বুকে অভিমান গুরুগুরু বাজে
আজ বাদে কাল বর্ষা নামবেই পাহাড়ে

তার আগে চল , দু'একটা খাঁজ ভরাট করি সবাই মিলে কিছু অক্ষরে , রঙ-তুলিতে
ভারী বর্ষায় স্রোতস্বিনী নেমে আসুক আমার সমতলে , খড়কুটো ভেসে গেলে পলি থেকে যাবে কিছু হলেও
কিছু বীজ আর কিছু চারাগাছ  , বড় হবে আশাতেই ভরসা

ছুটি তো নিশ্চয়ই হবে , পাওনা আছে যে!
                   --------------